Tuesday, June 28, 2016

অপারেশনের পর কেমন আছে সেই ‘বৃক্ষমানব’ আবুল বাজানদার।

২৮-৬-২০১৬
ওমর ফারুক:
চার মাস আগে খুলনার পাইকগাছা থেকে ঢাকায় আসেন দিনমজুর আবুল বাজানদার। হতদরিদ্র এই লোকটি গত ১০ বছর ধরে দুঃসহ জীবন কাটাচ্ছিলেন। এক বিরল রোগে আক্রান্ত হওয়ায় তার দুই হাত থেকে যেন গাছেরশিকড় বের হয়েছে। তার এ রোগের বিষয়টি আলোচিত হলে সারাদেশে ‘বৃক্ষমানব’ বলেই পরিচিত হন তিনি। তখন তার চোখে মুখে ছিল উদ্বেগ আর আতঙ্কের ছাপ।
কিন্তু চার মাস পরে সে পরিস্থিতি অনেকটাই কাটিয়ে উঠে এখন তিনি আত্মবিশ্বাসী। নিজের পরিপূর্ণ সুস্থতার জন্য এখন তিনি আশাবাদী। তিনিবলেন, আল্লাহর রহমতে আমি আবার সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক জীবনে চলতে-ফিরতে পারব।ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন আবুল বাজানদারের দু’হাত এবং দু’পা মোটা ব্যান্ডেজ দিয়ে মোড়ানো। হাত-পায়ে শেকড়ের মতো গজিয়ে উঠা বিরল এক রোগের চিকিৎসা দিতে তাকে দফায় –দফায় অস্ত্রোপচার করা হয়েছে।গত চার মাসে আবুল বাজনদারের হাতে এবং পায়ে মোট ছয়টি অপারেশন হয়েছে। এখন মোটা ব্যান্ডেজ খুলেতাকে নিয়মিত ড্রেসিং করানো হয়। দফায়-দফায় অস্ত্রোপচার করা হলেও তার হাত-পা এখনো কর্মক্ষম হয়নি। খাওয়া-দাওয়া থেকে শুরু করে সব কিছুতে তাকে অন্যের ওপর নির্ভর করতে হয়। তাই পাশেই থাকেন তার মা আমেনা বিবি।
আবুল বাজানদারের চিকিৎসক দলের অন্যতম ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, আমরা প্রথম দিকে তো তার আঙুলগুলো ইডেন্টিফাই (চিহ্নিত) করতে পারতাম না।কোনটা বুড়ো আঙুল, কানিয়া আঙুল। অপারেশনের মাধ্যমে আমরা তার আঙুলগুলো আলাদা করতে পেরেছি। তিনি মনে করেন আর কয়েক দফা অস্ত্রোপচারের পর বাজানদার হাত দিয়ে খেতে পারবেন।খুলনার পাইকগাছা পৌর সদরে ৫নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মানিক বাজানদারের ছেলে আবুল বাজানদার। ২০০৫ সালে আবুল বাজানদারের দেহে প্রথম এ রোগ দেখা দেয়। তখন তার বয়স ১৫ বছর। ভ্যানচালিয়ে সংসার চালাতেন আবুল বাজানদার। এক সময় তার হাতে ও পায়ে আঁচিলের মতো দেখা দেয়। সে আঁচিল ১০ বছরে ধীরে ধীরে ‘শিকড়ে’ রূপ নেয়। তার দুই পায়ের কিছু অংশেও এ রোগ ছড়িয়ে পড়েছে। রোগাক্রান্ত শরীরেই আবুল বাজানদার ৫ বছর আগে বিয়ে করেন। তার তিন বছরের একটি মেয়ে রয়েছে।

No comments:

Post a Comment